নওগাঁ জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা ও দর্শনীয় স্থান

 নওগাঁ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ, নওগাঁ জেলা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকলে আজকের মূল বিষয়। নওগাঁ জেলা দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে জানতে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়ুন। নওগাঁ জেলা ভ্রমণের আগে এবং দর্শনের জায়গা আপনাকে অনেক কিছু শিক্ষা দেবে এবং ধারণা করতে সক্ষম হবে।

নওগাঁ-জেলার-সবচেয়ে-জনপ্রিয়-জায়গা-ও-দর্শনীয়-স্থান


নওগাঁ, বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমা অঞ্চলের একটি জেলা। এই জেলা তার প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। যদি ইতিহাস সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির কিছু সময় কাটাতে চান তাহলে নওগাঁ জেলা আপনার জন্য একটি আদর্শ স্থান হতে পারে।

পেজ সূচীপত্র

    নওগাঁ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

    নওগাঁ জেলা বাংলাদেশের একটি প্রাচীনবাহী জেলা স্থান। এই জেলাটি তার সমৃদ্ধ ইতিহাস সুন্দর। প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং কৃষিজাত পণ্যের জন্য বিখ্যাত জেলা। নওগাঁ জেলায় তাল গাছের সাম্রাজ্য বলা হয়। এখানে হাজার হাজার তাদের গাছ রয়েছে এবং তালের গাছের রাস্তায় দেখতে পাওয়া এক সুন্দর দৃশ্য এটা শুধু নওগাঁ জেলাতে সম্ভব।

    ঐতিহাসিক স্থাপনা জেলায় বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। যেমন জমিদার বাড়ি মন্দির মসজিদ ইত্যাদি। নওগাঁ জেলা কৃষি প্রধান।এখানে ধান পার্ট বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হয়ে থাকে।এই জেলায় আরো একটি আকর্ষণ হচ্ছে জবাই বিল নওগাঁ জেলার একটি বিখ্যাত মৎস্য চাষের কেন্দ্র।

    নওগার খাবার এর জন্য বিখ্যাত। এখানকার মিষ্টি পিঠা এবং অন্যান্য খাবার সারাদেশে খ্যাতিমান।এই জেলায় সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত মিষ্টি। নওগাঁ লোকসংস্কৃতি ও খুব সমৃদ্ধ এখানে নানা ধরনের লোক সংগীত লোকনৃত্য এবং লোককথা প্রচলিত আছে। ব্যবসা-বাণিজ্য জন্য এই বিখ্যাত জেলা। 

    নওগাঁ-জেলার-ঐতিহাসিক-স্থান


    নওগাঁ জেলার ঐতিহাসিক স্থান 

    নওগাঁ  বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জেলা।এই জেলায় বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক স্থান আছে। আসুন জেনে নিয়ে আজকে সেই ঐতিহাসিক স্থানগুলো কোথায় অবস্থিত আছে।

    যেমন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারঃ এই পাহাড়পুর আবার সম্পূর্ণ মহাবিহার নামেও পরিচিত। সবচেয়ে ঐতিহাসিক স্থান হলো পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐ স্থাপনটি অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল এবং পাল সাম্রাজ্যের শিক্ষা ও ধর্মীয় কেন্দ্র ছিল। এই বিহারে ধ্বংস শেষ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এটি তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার ছিল। 

    কুসুমা মসজিদঃ নওগাঁ সদর থেকে প্রায় 35 কিলোমিটার দূরে মান্দা উপজেলায় অবস্থিত কুসুম্বা মসজিদ। পনেরশো শতাব্দীতে নির্মিত এই মসজিদটি ইন্দো আরব স্থাপত্যের একটি উৎকৃষ্টনির্দেশন মসজিদের জটিল খোদাই করা মেহরাব এবং গম্বুজ যুক্ত চাঁদ সে সময়ের শিল্পদের দক্ষতার পরিচয় বহন করে থাকে। 

    জগদ্দল বিহারঃ নওগাঁ জেলার আরেকটি প্রাচীন বৌদ্ধবিহার হল জগদ্দল বিহার। বিশাল নয় কিন্তু এই বিহারের স্থাপত্য শরীর এবং অবস্থান এটিকে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরেছে। 

    ভবানীপুর জমিদার বাড়িঃ নগর ভবানীপুর এই অবস্থিত এই জমিদার বাড়িটি বাংলা রাজ্যকে জীবনের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। এই বাড়ির স্থাপতাঞ্জলি বাংলা জমিদারকে জীবনযাত্রার সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেয়। 

    রবি ঠাকুরের কাচারিবাড়িঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর জীবন একটি অংশ কেটে গেছে তার কাছারি বাড়ি। এখনো নওাগাই রয়ে গেছে এবং এটি সাহিত্য প্রেমিকাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ।

    এছাড়া নওগায় আরো অনেক ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। একটি প্রাচীন পুরো আলতা দিঘী উদ্যান একটি সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য এটি ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে গণনা করা হয়। 

    নওগাঁ জেলা দর্শনীয় স্থান সমূহ

    নওগাঁ জেলা দর্শনীয় স্থান সময়ে নওগাঁ জেলায় ঘুরতে গেলে আপনি একাধিক ঐতিহাসিক স্থান এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহাসিক পেতে পারবে। নওগাঁ জেলার দর্শনীয় স্থান অনেক রয়েছে তার মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো যা করে আপনারা জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। 

    ঘুঘুডাঙ্গাঃ নওগাঁ জেলার তার ঐতিহাসিক স্থান ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত। এই জেলার অজানা রত্ন রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে ঘুঘু রাঙ্গা। আপনি যদি সরাসরি যান তাহলে দেখবেন প্রায় তিন থেকে চার কিলোমিটার পর রাস্তা দুই পাশে তালগাছে ঘেরা আর চারপাশে ধান খেয়ে নদী-নালা এবং দূরের গ্রামগুলি মনে রঙ শুরু করবে ঘুঘু ডাঙ্গার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এলাকার এক নজরে দেখা যায় সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় এক মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়। 

    এই ঘুঘুডাঙ্গায় প্রতি বছর এক নির্দিষ্ট তারিখে মেলা হয়। যে মেলায় বিভিন্ন তালের পিঠা তৈরি প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। এই প্রতিযোগিতায় যারা বিজয় হয় তাদের পুরস্কার দেওয়া হয় ছবি তুলে স্মৃতি সংগ্রহ করে যারা বন্ধুদের সাথে পিকনিক করতে পারেন। 

    কুসুম্বা মসজিদঃ বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত। সুলতানি আমলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রায় সাড়ে চারশত বছরের পুরানো এই মসজিদ। 

    কুসুমা মসজিদের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ। আলাউদ্দিন হোসাইন শাহ এর নাম লিপিবদ্ধ থাকায় ধারণা করা যায় তার শাসনামলে মসজিদ নির্মিত হয়েছিল এবং কাল ও ধূস বলে পাথর এবং পোড়ামাটির ফলক দ্বারা নির্মিত সুদৃশ্য কারুকার ঘোষিত মাটির ত্যালি মেহরাবে বিভিন্ন ফুল লতা পাতা ঝুলন্ত শিকল ও মনোরম পরিবেশ। 

    কুসুমা মসজিদ কেবল একটি ধর্ম স্থাপন নয়। এটি বড় নওগাঁ জেলার ইতিহাস ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতির একটি অংশ কুসুম বা মসজিদে সম্মুখে ২৫.৮৩ একরের একটি বিশাল জলাশয় রয়েছে মসজিদের অভ্যন্তর উত্তর পশ্চিম কোন স্তরে ওপর একটি উশু শাসন রয়েছে। যা ধারনা করায় সবাইকে কাজী বিচারক বিচার কার্য চালান। মসজিদের ছবি বাংলাদেশী ৫ টাকায় ছাপা আছে যার গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি করে। 

    নওগাঁ-জেলা-পার্ক-ও-খাবার


    নওগাঁ জেলা পার্ক সমূহ 

    নওগাঁ জেলা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। এই জেলার বিভিন্ন পার্ক প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এ পার্কগলি শুধুমাত্র বিনোদনের জায়গা নয়। শান্তি ও প্রশান্তি খুঁজতে আর সেই নওগাঁ জেলায় মানুষরা একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও বটে। নৌকার বিভিন্ন পার্কের একটি সুন্দর ভ্রমণে বের হয়। 

     সবচেয়ে জনপ্রিয় পার্ক গুলির মত একটি হলো ডালা পার্ক। এই পার্কটি তার সুন্দর পরিবেশে এবং বিভিন্ন আকর্ষণের জন্য পরিচিত নওগাঁ জেলা। পরিষদ পার্কঃএটি নওগাঁ শহরের প্রাণকেন্দ্র এই পার্কটি তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। 

    জনকল্যাণ পার্কঃ একটি ছোট পার্ক কিন্তু সুন্দর পার্টি তার শান্ত পরিবেশ এবং সবুজ প্রকৃতির জন্য জন্য পরিচিত। 

    নওগার পার্ক গুলিতে কি করা যায পার্ক গুলিতে বসে গান শোনা। শুধুমাত্র প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা পার্কের চারপাশে হাটা দৌড়ানো বা যোগাসন করা। পরিবার বা বন্ধুদের সাথে পিকনিক করার জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা। পার্কের সুন্দর দৃশ্যগুলি ক্যামেরাবন্দি করা। নওগাঁর পার্ক গুলি শুধুমাত্র একটি বিনোদনের জায়গা নয়। বরং প্রকৃতির সাথে যোগাযোগ এবং মানসিক শান্তি আসা মানুষদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা। 

    নওগাঁ জেলার বিখ্যাত খাবার 

    নওগাঁ জেলা শুধুমাত্র তার প্রকৃতি সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্যই নয় তার সুস্বাদু খাবারের জন্য বিখ্যাত। এই জেলার খাবারের রয়েছে এক অন্য স্বাদ।

    প্যারা সন্দেশঃ নওগাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত খাবার হল প্যারা সন্দেস এই মিষ্টির স্বাদ এতই যে এটি নওগাঁর পরিচয় গড়ে তোলে। 

    বিরিয়ানিঃ নওগার বিরিয়ানি ও খুব জনপ্রিয়। এখনকার বিরিয়ানির স্বাদ অন্য জায়গার বিরিয়ানির থেকে একটু আলাদা। মটরশুঁটির পরমাঃ একটি জনপ্রিয় তরকারি সাধারণত চালের সাথে খাওয়া হয়। মিঠা পাওঃ এ টি নওগাঁর একটি জনপ্রিয় নাস্তা মিঠা পাও সাধারণত চা বা কাফের সাথে খাওয়া হয়। 

    মাছের জাল সাধারণত দুপুরের খাবার হিসেবে খাওয়া হয়। নওগার খাবারের স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয়। যা এটিকে বিভিন্ন খাবারের ধরন মশলা ব্যবহার করা হয়। যায় এটিকে মজাদার স্বাদ দেয়। নৌকার খাবারের একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক জেলা তার সুস্বাদু খাবারের জন্য বিখ্যাত। ভ্রমন করেন তাহলে আপনার খাবারগুলি স্বাদ বুঝতে পারবেন। 

    নওগাঁ জেলার নদীর নাম 

    নওগাঁ জেলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে,নওগাঁ জেলা বিভিন্ন নদীতে সমৃদ্ধ জাহেলার ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন আত্রাই নদীঃ   এই নদীটি জেলার অন্যতম বৃহত্তম নদী। ভারতের পশ্চিম দিনাজপুর  জেলার বালুরঘাট থেকে নওগাঁ জেলার ধামইর হাট উপজেলা প্রবেশ করেছে। 

    এই নদীটি মাছ চাষ কৃষি এবং নৌকা চলাচলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ছোট যমুনা নদীঃ  এই নদীটিও জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী।এটি ভারত থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলায় প্রবেশ করেছে এবং নওগাঁ জেলায় বিভিন্ন উপজেলা হয়ে আত্রাই নদীর সাথে মিশেছে।এই নদীটি নৌকার জেলাকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে

    পূর্ণ ভবা নদীঃ এই নদীটির উপর শাহ উপজেলা অবস্থিত। কালের বিবর্তনে নদীটি বিলীন হতে চলেছে। আগে এই নদীটির তীরে মৃত্যুর নামক একটি বড় নৌবন্দর ছিল। ফকিরনি নদী ,শিব নদী, নাগর নদী, তুলসী গঙ্গা নদী এই নদী গুলোকেও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত। স্থানীয় জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

    কৃষি এই নদীগুলোর পানি দিয়ে কৃষি জমি কাজে ব্যবহৃত হয়। মাছ চাষ নদী গুলাতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় এবং এখানে মাছ চাষ করা হয় নৌকা চলাচল বর্ষাকালে এই নদীগুলোতে নৌকা চলাচল হয়। পানীয় জলের উৎস অনেক ক্ষেত্রেই নদীগুলো স্থানীয় জনগণের জন্য পানি জলের উৎস হয়

    শেষ কথা 

    নওগাঁ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ উপসংহার বলা যায়। নওগাঁ জেলা শুধুমাত্র ঐতিহাসিক জীবন্ত জাদুঘর। প্রকৃতির কোলে অবস্থিত এই জেলাটি তার ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতির জন্য সারাদেশে পরিচিত। যারা ইতিহাস সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভালোবাসেন তাদের জন্য নওগাঁ জেলা একটি আদর্শ পর্যটন কেন্দ্র। আপনি যদি নওগাঁ জেলা ভ্রমণ করতে পরিকল্পনা করেন। তাহলে নিশ্চিত থাকুন আপনি অবশ্যই আনন্দিত হবেন।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    টেকি আর্থ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url